হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণা অনুযায়ী, এ প্রযুক্তিতে এক মস্তিষ্ক থেকে আরেক মস্তিষ্কে তথ্য পাঠানো সম্ভব হবে হাজার মাইল দূর থেকেও।
গবেষণা সহযোগী তাত্ত্বিক পদার্থবিদ জিওউলিও রুফিনির মতে, ‘স্বপ্নের ভাবধারা প্রকাশের প্রযুক্তিগত উপলব্ধি এটি। এটি মোটেও জাদুকরি কিছু নয়। আমরা মস্তিষ্কের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বিদ্যুৎচৌম্বকীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।’
এ পরীক্ষার জন্য একজন ব্যক্তিকে তারবিহীন ইন্টারনেট সংযুক্ত ইলেকট্রো ইন সেফালোগ্রাম বা ইইজি পড়ানো হয়। এর পর সহজ অভিবাদনের শব্দ যেমন ‘হোলা’ বা ‘সিয়াও’ উচ্চারণ করতে বলা হয়। কম্পিউটার বায়োনারি কোডের মাধ্যমে শব্দটি ১ ও ০ সংখ্যায় স্থানান্তর করে।
এর পর মেসেজ ই-মেইলে ইন্ডিয়া থেকে ফ্রান্সে পাঠানো হয়। রোবটের মাধ্যমে মেসেজটি গ্রাহক বরাবর প্রেরণ করা হয়। মস্তিষ্কে উত্তেজনা ছাড়াই অপর ব্যক্তিটি তার চিন্তার জগতে একটি আলোর আভা দেখতে পান।
গ্রাহক কিছু শুনতে বা কোনো শব্দ দেখতে পান না। কিন্তু প্রাপ্ত আলোর আভা থেকে তিনি সংবাদটি বুঝতে পারেন।
গবেষণা সহযোগী আলভ্যারো প্যাসকুয়েল বলেন, আমরা আবিষ্কার করতে চেয়েছি, যদি দুইজন ব্যক্তি একে অপরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে চান এবং একজনের মস্তিষ্কের কার্যক্রম পড়ার পর দ্বিতীয় ব্যক্তিকে তার মস্তিষ্কের মধ্যে প্রবেশ করাতে চান তাহলে সেটা কীভাবে সম্ভব, যদি তা শারীরিক দূরত্ব ও বিদ্যমান যোগাযোগ ব্যবস্থার বাইরে থাকে?
তিনি বলেন, একটি উপায় হচ্ছে ইন্টারনেট। আমাদের প্রশ্ন হলো- আমরা কি পেরেছি কথা বলা বা লেখা ছাড়া সরাসরি মস্তিষ্ক-মস্তিষ্কের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে, যেখানে গ্রাহক বা বিষয়বস্তু ইন্ডিয়া আর ফ্রান্সের মধ্যে অবস্থিত?
রুফিনি বলেন, এ জন্য অতি যত্নসহকারে কাজ করা হচ্ছে। এতে এমন সংবেদনশীল তথ্য পাঠানো হচ্ছে, যাতে গ্রাহক প্রাপ্ত মেসেজ বা সংবাদের ব্যাখ্যা চাওয়ার জন্য আরও উদগ্রীব না হন। আগামী এক দশকের মধ্যে বিজ্ঞানীরা এ উপায়ে একজন আরেকজনের মধ্যে এভাবে সংবাদ পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। আমরা আশা করছি, দীর্ঘ সময়ের জন্য এটা যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।